মানুষের উৎপত্তি ও বিবর্তন

মানুষের উৎপত্তি নিয়ে বিভিন্ন তত্ত্ব প্রচলিত আছে। ১৮৫৯ সাথে প্রকাশিত "on the Origin of Species" গবেষণাগ্রন্থে ডারউইন জীবজগতের বিবর্তন তত্ত্ব ব্যাখ্যা করেন। যা সর্বপ্রথম মানুষের বিবর্তনের বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা হিসেবে বিশ্বব্যাপী বিজ্ঞানমনস্তকদের গ্রহণযোগ্য হয়ে ওঠে। এর পর একে একে নৃবিজ্ঞান , জীবাশ্মবিজ্ঞান, প্রত্নতত্ত্ব, অঙ্গসংস্থানবিদ্যা, জিনতত্ত্ব মানুষের বিবর্তনের বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা তুলে ধরে। হোম স্যাপিয়েন এর উৎপত্তি বন মানুষের নিকটতম কোন প্রজাতি থেকে। আনুমানিক ২৩ লক্ষ থেকে ২৪ লক্ষ বছর পূর্বে আফ্রিকাতে হোম গণের যেসব প্রাণির উদ্ভব ঘটেছিলো তাদের মধ্যে শুধুমাত্র মানুষেই টিকে আছে পৃথিবীতে। বিলুপ্ত গুলোর মধ্যে হোমো নিয়ানডার্টালেনসিস, যারা মধ্যপ্রাচ্যে ও ইউরোপে বসবাস করতো। আর এশিয়া জুড়ে ছিলো হোমো ইরেক্টাস প্রজাতিটি। প্রাণির দেহের গঠনের ভিত্তিতে বিজ্ঞানীদের নেয়া সার্বাধিক গ্রহণযোগ্য তত্ত্বটি হলো "আউট অফ আফ্রিকা"। যার সারমর্ম, আনুমানিক ৫০,০০০-১০০,০০০ বছর আগে আফ্রিকাতে উৎপত্তি লাভ করা মানুষ প্রজাতিটি পরবর্তীতে সারা পৃথিবী জুড়ে ছড়িয়ে গেছে।
"মানুষ বিবর্তিত প্রাণি" - বৈজ্ঞানিক প্রমাণ সমূহঃ
প্রমাণ একঃ
সংরক্ষিত ফসিল-
১। মানুষের কংকালটির পাশে একটি বানরের কংকাল। যা বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি যাদুঘর, আগারগাঁও, ঢাকায় সংরক্ষিত আছে। দুইটির মাঝে খুব একট পার্থক্য খুঁজে পাওয়া যায় না।
২। বিভিন্ন সময়ে পৃথিবীর বিভিন্ন অংশে পায় মানুষের বৃহৎ আকৃতির দেহাবশেষের কিছু চিত্র।
প্রমাণ দুইঃ
রক্তের সিরাম পরীক্ষা- রক্তে বিদ্যমান হিমোগ্লোবিন রক্তকে জমাট বাঁধায়। রক্ত জমাট বাঁধলে ঈষৎ হলুদ রঙ্গের তরল পদার্থ দেখা যায়, এগুলোকে সিরাম বলে। রক্ত সিরামে এন্টিজেন থাকে, যা অন্য প্রাণীর দেহে প্রবেশ করলে এন্টিবডি তৈরি করে। একজনের শরীরের সিরাম অন্য কারো শরীরে প্রবেশ করালে এন্টিজেন ও এন্টিবডির বিক্রিয়া শুরু হয়। এতে এক প্রকার তলানী কিংবা অধ:ক্ষেপ তৈরি হয়। বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা-নিরীক্ষায় দেখা গেছে, মানুষের সিরাম লেমুন, বানরের শরীরে প্রবেশ করালেও অধ:ক্ষেপ তৈরি হয়। যেসব প্রাণী মানুষে নিকটতম শ্রেণী, গোত্রের তাদের ক্ষেত্রে তলানীর পরিমাণ বেশি হয়। মানুষের সিরাম বিভিন্ন প্রাণির মধ্যে প্রবেশ করিয়ে দেখা গেছে, পুরুষ বানরের ক্ষেত্রে সব থেকে বেশি তলানী তৈরি হয়। পর্যায়ক্রমে এই তলানীর পরিমান বেশি পুরনো পৃথিবীর বানর, লেমুনের ক্ষেত্রে। রক্তের সিরাম নিয়ে এসব পরীক্ষা মানুষের বিবর্তন তত্ত্বকে সমর্থন করে।
প্রমাণ তিনঃ
কোষবংশগতিবিদ্যা-
অসংখ্য প্রজাতির প্রাণী আছে পৃথিবীতে কিন্তু সবগুলো প্রজাতিই "কমন জিন" বহন কিংবা শেয়ার করে। নিকটতম পূর্বপুরুষদের সাথে এই শেয়ার পরিমাণ বেশি। তাই আধুনিক মানুষ ও শিল্পাঞ্জির DNA প্রায় ৯৬% মিল পাওয়া গেছে। কুকুর আর মানুষের ক্ষেত্রে সেটা ৭৫% আর ড্যাফোডিল ফুলের সাথে ৩৩%।
DNA কি? মানব দেহ অসংখ্য কোষ নিয়ে গঠিত। প্রতিটি কোষের মাঝে থাকে নিউক্লিয়াস। নিউক্লিয়াসে জোড়ায়জোড়ায় ক্রোমসোম থাকে। মানুষেরক্ষেত্রে ২৩ জোড়া ক্রোমসোম বিদ্যমান। বিভিন্ন জীবের ক্ষেত্রে ক্রোমসোম জোড় বিভিন্ন। এই সব ক্রোমসোমের ভিতরেই DNA ও প্রোটিন থাকে। DNA এক প্রকার এসিড যা বিভিন্ন প্রকার প্রোটিন তৈরিতে সহায়তা করে। প্রোটিন শারীরিকবৃত্তিক কাজ সম্পন্ন করে। অন্যদিকে DNA রেপ্লিকেশন প্রক্রিয়ার প্রতিলিপি সৃষ্টির মাধ্যমে নতুন DNA তৈরি করে। এভাবে অসংখ্য নতুন DNA প্রতিলিপি তৈরি হয়। এই DNA -ই জীবের বংশ গতির ধারক ও বাহক। যেহেতু পৃথিবীর মানুষের গঠনগত ও আচারণগত ভিন্নতা আছে সেহেতু জীব বিবর্তন ধারা মেনে চলে। আর নতুন ডিএনএ তৈরির অর্থই নতুন জীবনের একক তৈরি।
প্রমাণ চারঃ
অঙ্গসংস্থানবিদ্যাঃ
১। অতিরিক্ত Vertibera - সাধারণভাবে মানুষে পাজরে ১২ টি ট্রিপিক্যাল ভ্যার্টিবেরা থাকে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে এর ব্যতিক্রম দেখা যায়। মেডিকেল পরীক্ষায় কিছু মানুষের দেখা গেছে ১৩ টি ভ্যার্টিবেরা থাকতে। পৃথিবীর প্রায় ৮% মানুষের ক্ষেত্রে এমনটা দেখা গেছে। অন্যদিকে গরিলা ও শিল্পাঞ্জির ১৩ টি ট্রিপিক্যাল ভ্যার্টিবেরা তাদের শারীরিক বৈশিষ্ট্য।
২। কোমরের হাড়/Bone pelvis - পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলভেদে এই হাড়ের গঠনগত পার্থক্য আছে। * গ্যাইনোকড়েট- যা গোলাকার পেলভিস। ৫০% নারীর ক্ষেত্রে এমনটা থাকে। *অ্যানড্রয়েট - যা হার্ট স্যাপের হয়ে থাকে। *অ্যানথ্রপয়েট - যা ওভাল আকৃতির। আফ্রিকান নিগ্র মহিলাদের ক্ষেত্রে এমনটা দেখা যায়। *প্লাটিপয়েট - যা ফ্লাট আকৃতির।
পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলভেদে মানুষের দেহের হাড়ের গঠনের পার্থক্য বিবর্তন ধারাকে সমর্থন করে।
৩। Coccyx হাড় - মানুষের আদি পূর্বপুরুষ প্রাইমেটরা গাছে ভারসাম্য রক্ষা করার জন্য লেজ ব্যবহার করতো। বিবর্তনে মাধ্যমে মাটির ওপরে বসবাসে উপযোগি হয়ে ওঠেছে। কিন্তু ঐ হাড় রয়ে গেছে।
৪। অ্যাপেন্ডিক্স/Appendix - আমাদের পূর্বপুরুষ প্রাইমেটরা ছিল তৃনভোজি। তৃণজাতীয় খাবারে সেলুলোজ থাকে। এই সেলুলোজ হজম করার জন্য তাদের দেহে এপেনডিক্সে বেশ বড় ছিল। ফলে সিকামে প্রচুর পরিমান ব্যাকটেরিয়ার থাকতে পারতো যাদের মূল কাজ ছিল সেলুলোজ হজমে সহায়তা করা। সময়ের সাথে আমাদের পূর্বপুরুষদের তৃনজাতীয় খাবারের উপর নির্ভরশীলতা কমতে থাকে, তারা মাংসাশী হতে শুরু হলে। আর মাংসাশী প্রাণীদের অ্যাপেন্ডিক্সের কোন প্রয়োজন নেই, প্রয়োজন বৃহৎ পাকস্থলীর। ফলে অপেক্ষাকৃত ছোট অ্যাপেন্ডিক্স এবং বড় পাকস্থলীর প্রাণীরা সংগ্রামে টিকে থাকার সামর্থ লাভ করে, হারিয়ে যেতে থাকে বাকিরা। পূর্বপুরুষের স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে সেই অ্যাপেন্ডিক্স আমরা এখনও বহন করে।
৫। আক্কেল দাঁত - আমাদের আক্কেল দাঁত নামক এক প্রকার দাঁত আছে। যা বর্তমানে অপ্রয়োজনীয় হিসেবে ধরা হয়। কিন্তু আমাদের আদি পূর্বপুরুষ প্রাইমেটরা ভৃণভোজি ছিলো আর এই দাঁত ব্যবহার করত। পাথর ও আগুন ব্যবহার শেখার আগে এমনটা ছিলো।
৬। শরীরের লোম- অনেকের ক্ষেত্রে বেশি আবার অনেকের ক্ষেত্রে কম দেখা যায়। আমাদের সমগোত্রীয় বিলুপ্ত কিংবা অবিলুপ্ত প্রাণিগুলো লোমশ ছিলো। যেমন, বানর, লেমুন গরিলা।
মানব মস্তিস্কের বিবর্তন
মস্তিস্কের ওপরে মানুষের বিবর্তনের মূল প্রভাব পড়েছে। মানুষের একই শ্রেণী, গোত্রের অনেক প্রাণিই প্রকৃতিতে টিকতে না পেরে হারিয়ে গেছে। কিন্তু মানুষ টিকে আছে শুধুমাত্র তার মস্তিস্কের জোরেই। যদিও মূল শরীরের ২% মস্তিস্ক কিন্তু পুরো শরীরের তুলনায় ২০% শক্তি খরচ হয় মস্তিস্কে। মস্তিস্কের বাইরের দিকের অংশ নিওকর্টেক্স। এটি চিন্তা, কল্পনা, অনুভূতির বিষয়গুলো নিয়ন্ত্রণ করে। মানুষের বিবর্তনে সব থেকে বেশি পরিবর্তন ঘটেছে নিওকর্টেক্সের।
তথ্যসূত্রঃ
*ইউকিপিডিয়া
*বিবর্তনের পথ ধরে- বন্যা আহমেদ

সিপুর সাক্ষাত

সিপুর সাথে আমার পরিচয়টা মাস তিনেক আগে। কোন এক নির্জন একাকী সময়ের সুযোগে তার প্রথম আবির্ভাব। কল্পচিত্র সংমিশ্রিত গল্প লেখার প্রবণতায় সে হতে চায় প্রধান চরিত্র।
প্রথম সাক্ষাতে সিপুর বলা কথাগুলোঃ

তার উৎপত্তি- অ্যামোনিয়া, হাইড্রোজেন ও অন্যান্য গ্যাসের সংমিশ্রনে প্রথম জীবের সৃষ্টি। আর আবহাওয়ার প্রভাবে আমি সেই জীবের বিবর্তনের একটি রূপ মাত্র। আমার এই বিবর্তনের ধারা এখনো চলমান। তাইতো আমার সহশ্রেণীর
আফ্রিকান, ইন্ডিয়ান, চাইনিজ, ইউরোপিয়ানদের গঠন, রং ভিন্ন ভিন্ন।
তার অস্তিত্ব-- প্রকৃতির চলমান প্রক্রিয়ায় প্রতিনিয়ত সংঘটিত সংগ্রামে মস্তিস্কের ক্রিয়ায় ঠিকে থাকাই আমার অস্তিত্ব।
--- সৃষ্টির পর প্রথম পৃথিবীতে যখন সূর্যালোর স্পর্শ পাই তখন অনেকটাই সংবেদনহীন। ধীরে ধীরে চারপাশে প্রতিক্রিয়াতে আমার সংবেদনশীল
অঙ্গ গুলো ক্রিয়াশীল হতে শুরু করে। সামাজিকীকরণের প্রক্রিয়ায় পড়ি আমি। তৈরি হয় আমার রুচিবোধগুলো, চিন্তাচেতনার সীমানাগুলো। আর এভাবে আমি অন্তর্ভূক্ত হয়ে পড়ি আমার বেড়ে ওঠা সমাজ, সংস্কৃতির।

বর্ণকথা

বর্ণমালাঃ-০১
অন্তরের অন্তরালে অনুভব অনন্ত।
অসম্ভবনার অকথ্য আলাপনা আজো।

বর্ণমালাঃ-০২
আমিত্ব আমার আধারে আটকা।
আলোর আঁচে আন্দোলিত আত্তা।

বর্ণমালাঃ-০৩
ইদানিং ইন্দ্রজালে ইচ্ছের ইস্যু।
ইওত্তাহীন ইতিকথার ইঙ্গিত ইতিবাচক

বর্ণমালাঃ-০৪
ঈষৎ ঈর্ষায় ঈর্ষান্বিত ঈশ্বরত্ব।
ঈশ্বরীয় ঈদে ঈস্পিত ঈশ্বরবাদ।

বর্ণমালাঃ-০৫
উর্বর উপমার উন্মেষে উন্নাদ।
উৎফুল্লতার উষ্ণ উঁকির উৎপত্তি।

বর্তমান পরিস্থিতি

ভ্যাট বৃদ্ধি।
ধর্ম মুক্তি।
স্বার্থ চুক্তি।
নীতি ভ্রান্তি।
কর্ম ত্রুটি।
অস্ত্র মুখী।
ক্ষমতা ভক্তি।
দালাল লিপ্তি।
সস্তি বিলুপ্তি।
নাট্য শিল্পী।
চেতনা সৃষ্টি।
সংস্কৃতি বিকৃতি।
বর্তমান পরিস্থিতি।

অবেলার স্বপ্নকর্মী

হে ছায়া মানবী,
শরতের নির্জন মেঠো পথ। দু’ধারে তার
সাদা কাশফুলে ভরে থাকা কাশবন।
আমি এক একলা পথিক, সঙ্গ পেয়েছি
তোমার কল্পো অনুভূতিতে।
হেমন্তের আকাশের নীলিমায় দৃষ্টি
সীমার প্রান্তে খুঁজেছি, তোমার হৃদয়
উদারতার প্রশস্ততা।
তোমার শীতল অনুভূতিগুলো দেখেছি,
শীতের সবুজ ঘাসে শিশির বিন্দু রূপে
জমে থাকতে। সূর্য তাপে মতো
জীবনের কঠিনতর মহূর্তে যেগুলো
বিলীন হয়ে যায় অতি সহজে।
বসন্তে কৃষ্ণচুড়ার ডালে কোকিলের
ডাকে খুঁজেছি তোমায় ক্ষণে ক্ষণে।
বর্ষার ঝিমঝিম বৃষ্টিতে মৃদু
দিবালোকে দমকা শীতল হওয়ায় গল্প
সঙ্গীর শূন্যতায় তুমি ছিলে পাশে।
সন্ধ্য তাঁরার চাঁদিনী রাতে তোমার
সঙ্গ পেতে বসে থাকা একলা ছাদে।
হে ছায়া মানবী, আমি এক নিশ্চক
স্বপ্নকর্মী। তোমার শূন্যতায় স্বপ্ন হত্যার
দায়ভার তোমাকেই দিয়ে দিচ্ছি।
কালের দ্বিমূখী স্রোতে আমি
নিস্তব্ধ। কখনো দিক ভ্রান্ত। বাস্তবতার
নির্দয় আঘাতে ঘটেছে আবেগাক্রান্ত
ইচ্ছেগুলোর বিপর্যয় প্রতিনিয়ত। অশুভ সময়
স্রোতের বিপরীতে স্থির থাকার
দৃঢ়তা খুঁজি। ইট, বালু, কংক্রিটের
দেয়ালে আবদ্ধ থেকে কি-বোর্ড,
কলমের সাথে ক্ষণে ক্ষণে বন্ধুত্ব
পাতি।

ঘাঘট নদীর তীরে কিছুক্ষণ

প্রয়াস সেনা বিনোদন পার্ক, রংপুর। ঘাঘট নদীর তীরে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধায়নে কৃত্রিমভাবে গড়ে ওঠা একটি পার্ক। ২০১৪ এর সেপ্টেম্বরে প্রাথমিকভাবে চালু করা হয় এটি। রংপুর বাস টার্মিনাল থেকে তিন কিলো পশ্চিমে রংপুর-পার্বর্তীপুর সড়ক ঘেঁষে নিসতেবগঞ্জ নামক জায়গায় অবস্থিত। তিস্তা নদীর তীরে অবস্থিত রংপুর জেলাটি কিন্তু রংপুর শহর ঘাঘট নদীর তীর ঘেঁষে। ঘাঘট তিস্তার একটি শাখা নদী। মৃত্য প্রায় এই নদীটি কোথাও কোথাও সামান্য স্রোতহীন জল নিয়ে কোন মতে বেঁচে আছে। বর্তমান অবস্থায় প্রথম দেখায় নদী হিসেবে স্বীকৃতি দিতে চাইবে না অনেকেই। তিস্তার সুষ্ঠু পানি বণ্টনের বিলম্বতাই উত্তরাঞ্চলের এমন অনেক নদীর মৃত্যুর অন্যতম কারণ। মাঝে মাঝে অতি বৃষ্টির বর্ষা মৌসুমে অতীত যৌবন ফিরিয়ে আসে নদীটির। পার্কটির সৌন্দর্যময় নীরব পরিবেশ প্রায় মনকে ডেকে নিয়ে যায় আলিঙ্গনে নেশায়। নির্জনতা প্রিয় সময় কাটাতে বেশ ভালোই লাগে। মাঝে মাঝে নিমের ডালে এক ঝাঁক কাকের এলোমেলো ডাকে নিঃশব্দতার প্রাচীরে ফাটল ধরে। আনাচে-কানাচে ছাতার আড়ালে তরুণ কপোত-কপোতিদের চলে প্রেম চর্চা। পার্কটির বেশ কয়েক জায়গায় একটি লেখা চোখে পড়ে, ” পার্কে প্রবেশের মাধ্যমে আপনি প্রতিবন্ধি শিশুদের সহায়তা করেছেন”।

ভুমিকম্পে বাংলাদেশের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা ও তৎক্ষাণিত করণীয়

প্রাকৃতিক ভাবে বাংলাদেশ ভুমিকম্পপ্রবণ এলাকাতে অবস্থিত। বিশেষজ্ঞদের মতে,যেকোন সময় বড় ধরনের ভুমিকম্পে বাংলাদেশ ব্যপক ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখিন হতে পারে।


বাংলাদেশের ভুমিকম্প প্রবণ অঞ্চল সমূহঃ
* প্রথম বলয় (প্রলয়ন্কারী ভূমিকম্প) : বান্দরবান, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ ও রংপুর এই বলয়ে অবস্থিত এবং এই বলয়ে ভূমিকম্পের সম্ভাব্য মাত্রা রিখটার স্কেলে ৭ ধরা হয়েছে৷
*দ্বিতীয় বলয়  (বিপদজনক ভূমিকম্প) : ঢাকা, টাঙ্গাইল, বগুড়া, দিনাজপুর, কুমিল্লা ও রাঙ্গামাটি এতে অবস্থিত এবং এখানে ভূমিকম্পের সম্ভাব্য মাত্রা রিখটার স্কেলে ৬ ধরা হয়েছে৷
* তৃতীয় বলয় (লঘু অঞ্চল) : উপরোক্ত এলাকাগুলো ছাড়া দেশের অন্যান্য এলাকাগুলো যা মোটামুটি নিরাপদ সেগুলো এবলয়ে অবস্থিত৷ এসব অঞ্চলে ভূমিকম্পের সম্ভাব্য মাত্রা রিখটার স্কেলে ৬ এর নিচে ধরা হয়েছে৷

ভূমিকম্পের সময় করণীয়: ভুমিকম্পের সময় তৎক্ষাণীত কিছু করণীয় কাজ।
১।নিজেকে রক্ষা করুনঃকয়েক সেকেণ্ড বা মিনিটখানেক সময় ভুমিকম্পের স্থায়িত্ব।এই সময়ে ঘরে অবস্থান করলে টেবিল বা ডেস্কের নিচে সপরিবারে অবস্থান নিন। আপনার মাথায় কোনকিছুর আঘাত পাওয়া থেকে রক্ষা পাবেন।
 ২।ইলেক্টিক,তেল,গ্যাসের চুলা দ্রুত বন্ধ করুনঃভূমিকম্পের সময় আগুন লেগে ক্ষয়-ক্ষতির পরিমান অনেক বেড়ে যেতে পারে। এমন পরিস্থিতি থেকে রক্ষা পেতে যত দ্রুত সম্ভব রান্না ঘরের গ্যাস, তেল বা ইলেক্ট্রিক চুলা বন্ধ করুন। মনে রাখবেন যত ছোট ভূমিকম্পই হোক না কেন চুলা অবশ্যই বন্ধ করতে হবে।
৩।তাড়াহুড়া না করে মাথা ঠাণ্ডা রাখুনঃভূমিকম্পের সময় তাড়াহুড়ো করে বাইরে বেড় হতে গেলে ভীড়ে চাপা পড়ে বা উপর হতে মাথায় কিছু পড়ে আহত হতে পারেন। এই জন্য তাড়াহুড়ো না করে ধীর স্থিরভাবে আশপাশ পর্যবেক্ষণ করে তারপর বাইরে বেড় হবার চেষ্টা করুন।
 ৪।দরজা খোলা রাখুনঃদালানে বসবাসকারীদের প্রধান সমস্যা হয় ভূমিকম্পের সময় দরজা আটকে বন্দী হয়ে যাওয়া। এইজন্য বাইরে যাবার দরজাটি খোলার ব্যবস্থা করুন।
 ৫।ভবনে থাকা অবস্থায় বা বের হওয়ার সময় মাথাকে রক্ষা করুণঃভূমিকম্পের সময় বহুতল ভবন হতে বাইরে বেড় হবার সময় অনেকেই উপর হতে কোন কিছু পড়ে মাথায় আঘাত পেয়ে থাকেন। এটা এড়াতে বাইরে বেড় হবার সময় মাথার উপর শক্ত বোর্ড বা ট্রে জাতীয় কিছু ধরে রাখুন। এতে করে উপর থেকে কিছু পড়লেও আপনার মাথায় আঘাত লাগবে না। বিছানায় শুয়ে থাকা অবস্থায় ভূমিকম্প হলে বালিশটি মাথার নীচ হতে মাথার ওপরে আনুন।
৬।পাবলিক প্লেজে করণীয়ঃসিনেমা হল, অডিটোরিয়াম, ডিপার্টমেণ্টাল স্টোর, রেল স্টেশন বা এয়ারপোর্টের মত পাবলিক প্লেসে থাকলে সেখানে কর্তব্যরত নিরাপত্তা কর্মী ও স্বেচ্ছাসেবকদের পরামর্শ অনুসরন করুন।
৭।রাস্তায় বামদিকে গাড়ি পার্কিং করুণঃ ভূমিকম্পের সময় আপনি যদি গাড়ি চালানো অবস্থায় থাকেন তাহলে ধীরে ধীরে আপনার গাড়িটি রাস্তার বামপাশে পার্ক করুন। কোন অবস্থাতেই ভূমিকম্পের সময় গাড়ি চালাবেন না।

৮।পাহাড়ি এলাকায় গড়িয়ে পড়া পাথর ও ভুমিধ্বস সম্পর্কে সতর্ক থাকুনঃভুমিকম্পের সময় পাহাড়ের কাছে থাকলে অতি দ্রুত নিরাপদ খোলা মাঠের মতো জায়গায় যান।
৯।উপদ্রুত এলাকা থাকে দ্রুত সরে যানঃভুমিকম্প উপদ্রুত এলাকা দ্রুত নিরাপদ খোলা জায়গায় যান। এ সময় গাড়ি ব্যবহার না করে পায়ে হেঁটে যাওয়া নিরাপদ।

 ১০।গুজব শুনে বিভ্রান্ত হবেন নাঃছড়ানো গুজব শুনে নিজে নিজের বিপদ ডেকে আনবেন না। সঠিক তথ্যের জন্য রেডিও কিংবা টিভিতে বুলেটিন শুনুন।


সূত্রঃ সংগৃহীত